তাকওয়া : রামাযানের শিক্ষা

বর্ষঃ ২ সংখ্যাঃ ৩
মার্চ, ২০২৫

তাকওয়া : রামাযানের শিক্ষা

ইঞ্জি. তাহসিন আল মাহি

Views: 53

Share:

রোযা বা সিয়ামকে আল্লাহ ফরয করেছেন এজন্য যে, আমরা যেন তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জন করতে পারি। ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে তাকওয়া। আল্লাহকে না দেখা সত্ত্বেও তাঁর দেওয়া আদেশ-নিষেধ মান্য করা একজন মুমিনের ঈমানকে পূর্ণতা দেয়। যার ভেতর আল্লাহর ভয় নেই তার দ্বারা যেকোনো পাপ সংঘটিত হওয়া সহজ।

রোযা অর্থ কেবল পানাহার ত্যাগ করা নয়, বরং নিজের ষড়রিপুকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মিথ্যা, গীবত, অন্যায়, ঘুষ, ওজনে কম দেওয়া, খাদ্যে ভেজাল দেওয়া ইত্যাদি সকল পাপ বর্জন করাই রোযা।

রামাযান মাস আসলেই যারা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন, পণ্য মজুদের মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরী করেন, খাদ্যে ভেজাল দিয়ে অবৈধ পন্থায় মুনাফা অর্জন করেন তাদের রোযা আল্লাহর দরবারে কতটুকু কবুল হয় তা ভাববার বিষয়। দেখা যায় বহু নামাযী এবং দাড়ি-টুপিওয়ালা এসব অন্যায়ের সাথে জড়িত। বাহ্যিকভাবে তাদেরকে দেখে মুসলিম বলে মনে হলেও ঈমান তাদের অন্তরে ঢোকেনি।

অনেক মুসলিম দাবীদার এ মাসে ফরয রোযাটুকুও পালন করেন না। কাপড় দিয়ে ঘিরে রাখা হোটেলে পানাহার করেন। যেন কাপড় দিয়ে ঘিরে দিলে আল্লাহ তাআলা দেখতে পাবেন না। নাঊযুবিল্লাহ। কেউ কেউ রোযা রাখেন, কিন্তু নামায আদায় করেন না। তাদের কাছে রোযা কোনো ইবাদত নয়, বরং সংস্কৃতি। ইফতার পার্টি, সেহরী পার্টি ইত্যাদি নারী-পুরুষ মিশ্রিত অনুষ্ঠানকে তারা মোটেও দোষণীয় মনে করে না।

এমনও অনেক হতভাগা আছে যারা বরকতময় এ মাসে কুরআন তেলাওয়াতের সময়টুকুও বের করতে পারে না। রামাযানে সাহাবায়ে কেরাম বেশী বেশী কুরআন তেলাওয়াত করতেন। তারা যখন কুরআন তেলাওয়াত করতেন তখন তারা আল্লাহর ভয়ে কাঁদতেন। মহাপবিত্র এই কিতাব তাদের অন্তরে তাকওয়া জাগ্রত করে দিতো।

সিয়াম, কিয়াম, তেলাওয়াত- সব মিলিয়ে রামাযান মাস আমাদেরকে মুত্তাকী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার বিশাল সুযোগ তৈরী করে দেয়। সেই সুযোগ কি আমরা আদৌও কাজে লাগাচ্ছি?

বাংলাদেশকে আমরা ৯০% মুসলিমের দেশ বলে দাবী করলেও হাতে গোণা গুটিকয়েক মানুষ বাদে বাকীরা বাহ্যিকভাবে মুসলিম; রামাযান মাসে তাদের অসাধু রূপ আরও প্রকট হয়। দিনে সিয়াম, রাতে কিয়াম করে কী লাভ যদি সিয়ামের প্রকৃত শিক্ষা তাকওয়া অর্জন করা না যায়!