রমযান ও গাযওয়ায়ে বদর

বর্ষঃ ১ সংখ্যাঃ ৩
মার্চ, ২০২৪

রমযান ও গাযওয়ায়ে বদর

ইঞ্জি. তাহসিন আল মাহি

Views: 164

Share:

আল্লাহর কাছে সম্মানিত মাস রমযান আমাদের মাঝে সমাগত। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ রহমত ও মাগফেরাত নিয়ে প্রতি বছর রমযান মাস আমাদের মাঝে আসে। এমন বরকতময় মাসে যে নিজেকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা করে নিতে পারেনি তার জন্য আল্লাহ, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং জিবরাঈল আলাইহিস সালাম ধ্বংস কামনা করেছেন। তাই এই মাসে আমাদেরকে ইবাদত-বন্দেগীতে কতটা সময় ব্যয় করা উচিত তা সহজেই অনুমেয়।

রমযান মাস মুসলিমদের ইতিহাসে বদর যুদ্ধের জন্য চিরস্মরণীয়। হক ও বাতিলের পার্থক্য নিরূপণকারী এই অসম যুদ্ধ ২য় হিজরীর ১৭ রমযান (৬২৪ খ্রিস্টাব্দের ১১ মার্চ) শুক্রবার সকালে শুরু হয়, যার মুসলিম পক্ষে ছিলেন ৩১৩ জন আর মুশরিক পক্ষে ছিলো ১ হাজার জন। সেদিন যুদ্ধ শুরুর আগে সাইয়্যেদুল মুরসালীন-এর হৃদয় বিগলিত করা ডাকে সাড়া দিয়ে আল্লাহ তাআলা ৫ হাজার ফেরেশতা নাযিল করে মুশরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর বিজয়কে সমুন্নত করেছিলেন।

ঠিক এই মার্চ মাসেই মুসলিম জাতির জন্য আরেক পরাজয়ের অধ্যায় রচিত হয়েছিলো তুরস্কে ওসমানীয় খেলাফত পতনের মধ্য দিয়ে। জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের শয়তানী থাবায় মুসলিম জাহানের ঐক্যকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছিলো। ১৯২৪ সালের ৩ মার্চ কামাল পাশা ও তার দোসররা ওসমানীয় খেলাফতকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে গোটা মুসলিম উম্মাহকে পঙ্গু করে দেয়।

খেলাফত পতনের ১০০ বছর পার হয়ে গেল, অথচ আজ পর্যন্ত ইসলামী খেলাফত পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হলো না। বদরের ময়দানে ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান সাহাবীগণকে স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সাহায্য পাঠিয়ে যেভাবে বিজয় দান করেছিলেন, আজও যদি আমরা সেরকম ঈমানের কিয়দাংশও অর্জন করতে পারি তাহলেও আল্লাহর সাহায্য অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু আফসোস এই যে, মুসলিমরা আজ ইসলামকে দূরে ঠেলে দিয়ে জাতীয়তাবাদ আর ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। জিহাদকে তারা ভুলে গিয়েছে। কাফেরদের অপপ্রচারে জিহাদের মতো ফরয ইবাদতকে সন্ত্রাসের প্রতিশব্দ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। মুসলিমরা নিজেরাই ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতিকে নিজ হাতে কবর দিয়ে দিয়েছে। তাইতো কত রমযান এসে চলে গেলো, অথচ আরেকটা বদর আর এলো না।